চাকরির বিনিময়ে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগ। সেই ঘটনায় এবার বেলডাঙ্গার ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রধান কার্তিক মহারাজকে নোটিস পাঠাল রাজ্য পুলিশ। আগামিকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার তাঁকে নবগ্রাম থানায় হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সম্প্রতি কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন এক মহিলা। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালে কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কার্তিক মহারাজ তাঁকে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানা এলাকার চাণক্য এলাকায় এক আশ্রমের প্রাইমারি স্কুলে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে শিক্ষিকার পদে নিয়োগ করা হয়। স্কুলে থাকার জন্য তাঁকে একটি ঘরও দেওয়া হয়। সেখান থেকেই শুরু হয় দুঃস্বপ্নের জীবন। অভিযোগ, এক রাতে নাকি আচমকাই মহারাজ এসে তাঁকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। বাধ্য হয়ে তা মেনে নিতে হয় বলে জানান অভিযোগকারিণী। কারণ, ততদিনে তিনি ঘরবাড়ি ছেড়ে মহারাজের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। এরপর দিনের পর দিন তার উপর শারীরিক অত্যাচার চালানো হয় বলে অভিযোগ। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার রাতে নবগ্রাম থানায় কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন মহিলা। তাঁর উপর অত্যাচারের ঘটনায় বিচারের দাবি জানান তিনি।
সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫
মুখ্যসচিব পদে আরও ৬ মাস মনোজ!
মুখ্যসচিব পদে আজই (৩০ জুন) তাঁর মেয়াদ হওয়ার কথা ছিল। তাঁর জায়গায় কে মুখ্যসচিব হবেন, তা নিয়ে আমলা মহলে আলোচনাও শুরু হয়। এর মধ্যে এদিন কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিল, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব পদে মনোজ পন্থের মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানো হল।কেন্দ্রের প্রশিক্ষণ ও কর্মিবর্গ দফতরের তরফে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে পাঠানো বার্তায় বলা হয়, মুখ্যসচিব হিসেবে মনোজ পন্থের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য গত ২৮ জুন রাজ্যের তরফে আবেদন করা হয়েছিল। তার ভিত্তিতে মনোজ পন্থের মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুখ্যসচিব পদে থাকবেন মনোজ পন্থ। ২০২৪ সালের ৩১ অগস্ট ভগবতী প্রসাদ গোপালিকার জায়গায় মুখ্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব নেন মনোজ পন্থ। মুখ্যসচিব হিসেবে গোপালিকার মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছিল রাজ্য। কিন্তু, দিল্লি তাতে সায় দেয়নি। তারপরই মনোজ পন্থের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, মনোজ পন্থ ১৯৯১ ব্যাচের আইএএস অফিসার। তিন দশকের বেশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই আমলা নানা দায়িত্ব সামলেছেন। একসময় মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক ছিলেন। উত্তর ২৪ পরগনারও জেলাশাসকের দায়িত্ব সামলেছেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত সচিবের দায়িত্বও সামলেছেন। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। তিন বছর বিশ্ব ব্যাঙ্কের সিনিয়র অ্যাডভাইজার ছিলেন মনোজ পন্থ।
কসবায় গণধর্ষণ; হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা
কসবার কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। সোমবার সকালে আইনজীবী সৌম্য শুভ্র রায় হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে। আইনজীবী জানান, তিনি কসবার ঘটনা নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করতে চান। মামলা দায়েররের অনুমতি দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ । কবে এই মামলার শুনানি হবে তা এখনও স্পষ্ট নয় ।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় জনস্বার্থ মামলা দায়ের করতে চেয়ে অনেকেই আবেদন করেছিলেন হাইকোর্টে। প্রথম আবেদনকারী ছিলেন বিজয় কুমার সিংঘল। কসবার ল'কলেজে গণধর্ষণ মামলাতেও তিনিই প্রথম আবেদনকারী। অন্যদিকে, কসবার নির্মম ঘটনার প্রতিবাদে আগামী ২ জুলাই কালীঘাট থেকে কসবা পর্যন্ত মিছিল করতে চায় বিজেপি যুব মোর্চা। অনুমতি দেয়নি পুলিশ। মিছিল করতে চেয়ে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল বিজেপি যুব মোর্চা। মামলা দায়েরের অনুমতি দিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। আগামিকাল এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা।
নিজের তৈরি ছক ভেঙে তৃণমূলের কুণালকে তীব্র আক্রমণ করলেন মীনাক্ষী!
বাম আমলে শীর্ষ নেতাদের ভাষণ পর্বে বিরোধী পক্ষের প্রতি সৌজন্য হারানোর উদাহরণ খুব একটা চোখে পড়ত না। কিন্তু বর্তমানে রাজনৈতিক নেতারা, সৌজন্যের বদলে মেতে ওঠে 'অসৌজন্যের রাজনীতিতে'। শনিবার নদিয়ার কালীগঞ্জে গিয়েছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম-সহ বাম ব্রিগেডের এক ঝাঁক নেতা-নেত্রী। গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির নতুন সদস্য মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। সেখানেই বোমায় নিহত তামান্নার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁরা পৌঁছে যান পলাশিতে। সেখানেই আয়োজিত হয়েছিল একটি জনসভা। তাতেই ভাষণ দিতে উঠে নিজের লাগাম হারালেন মীনাক্ষী। করে বসলেন বিতর্কিত মন্তব্য। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের দিকে তোপ দেগে তিনি বলেন, 'ওরা চুরি করেছে, নির্লজ্জ। একটা মুখপাত্র বসিয়ে রেখেছে, তার আমরা ভাষণ শুনব? সে বলে দেবে পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতি কী হবে? কোথায় গেল এখানকার বিধায়ক?' এই বাক্যের মাঝেই কুণালের বিরুদ্ধে একবার কিছু বিশেষ শব্দ-বন্ধনীর প্রয়োগ করেছেন মীনাক্ষী। পাল্টা কুণাল ঘোষ বলেন,'যিনি আমার নামে এই সব বলছেন, তাঁকে বলব, তাঁর বাপ-ঠাকুরদার কাছ থেকে জেনে আসুক কোন পরিবার, কাদের সম্পর্ক কথা বলছেন।'
কলেজে টেকা দায় ছিল ছাত্রীদের; আগেও ২ ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা করেছে; কসবা কাণ্ডের মূল অভিযুক্তর নানা কীর্তি সামনে আসছে
কসবার আইন কলেজে গণধর্ষণের শিকার প্রথম বর্ষের ছাত্রী। এই ইস্যুতে উত্তাল গোটা রাজ্য। মূল অভিযুক্ত কলেজেরই 'দাদা' তথা অস্থায়ী কর্মী। তৃণমূল নেতা ওই অভিযুক্তকে ধর্ষণে মদত দিয়েছিল কলেজেরই দুই ছাত্র। কসবা কাণ্ডে যত তদন্ত এগোচ্ছে, ততই গুণধর নেতার নানা কীর্তি সামনে আসছে। জানা গেল, মূল অভিযুক্তের নামে এর আগেও তিন যুবতীর শ্লীলতাহানি ও যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ, ওই তৃণমূল নেতার উপদ্রবে কলেজে টেকা দায় ছিল ছাত্রীদের। নানাভাবে ছাত্রীদের হেনস্থা, হয়রানি করত অভিযুক্ত। সেই কারণে ২০১৮ সালে ৪ বছরের জন্য বহিস্কৃতও হয় অভিযুক্। কলেজ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, পরীক্ষা ছাড়া কলেজে আসতে পারবে না ওই অভিযুক্ত। এর পর ২০২২ সালে সাসপেনশন ওঠার পরে ২০২৩ সাল থেকে ফের কলেজের দাদা হয়ে ওঠে। ২০২৩ সালে কলেজে আসার সঙ্গে সঙ্গে ফের শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। কসবা কাণ্ডে মূল অভিযুক্তের ক্রিমিনাল রেকর্ডের দিকে যদি দেখা যায়, তাহলে চোখ কপালে উঠবে। ২০১২ সালে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে ভর্তি হয় অভিযুক্ত। ২০১৩ সালে তাঁর বিরুদ্ধে কালীঘাট থানা এলাকায় ক্যাটারিং কর্মীর আঙুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এর জেরে কলেজের অ্যাডমিশন বাতিল হয়। সেই সময় ৩ বছর ওড়িশায় গা ঢাকা দিয়েছিল অভিযুক্ত।
২০১৭ সালে ফের কলেজে রি-অ্যাডমিশন নেয় অভিযুক্ত। ২০১৮ সালের ১৬ মার্চ মনোজিতের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনে ২ ছাত্রী। এনআরএসে মেডিক্যাল-ও হয়েছিল ওই ২ ছাত্রীর। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে ধামাচাপা পড়ে যায় ওই ঘটনা। তারপরেও কলেজে উপদ্রব থামেনি অভিযুক্তের। ৪ বছর সাসপেন্ড হওয়ার পর আবার কলেজে ফিরে এসে গুন্ডামি।
২০২৩ সালের ২৩ মার্চ ফের মেয়েদের উত্যক্ত করার অভিযোগ ওঠে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। সেই বছরই ১ ডিসেম্বর গুন্ডা দিয়ে ছাত্র পেটানোর অভিযোগ দায়ের হয় কসবা থানা এলাকায়। গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর ফের ছাত্র পেটানোর অভিযোগ ওঠে টলিগঞ্জ থানা এলাকায়।
রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫
এসএফআইয়ের শীর্ষপদে সৃজন!
আবার সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের শীর্ষ পদে বসলেন বাঙালি নেতা। কেরলে এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সম্মেলনে নতুন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেন সৃজন ভট্টাচার্য। গত শুক্রবার থেকে কেরলের কোঝিকোড়ে শুরু হয়েছিল এসএফআইয়ের ১৮তম সর্বভারতীয় সম্মেলন। তিন দিনব্যাপী সেই সম্মেলন রবিবার শেষ হয়েছে। সম্মেলন শেষে বাংলার ছাত্রনেতা সৃজন সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। সর্বভারতীয় সভাপতি পদে বসেছেন কেরলের আদর্শ এম সাজি। এর আগের দু-টি মেয়াদে এসএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বাংলারই আর এক নেতা, তথা প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী ময়ূখ বিশ্বাস। সভাপতি পদে ছিলেন কেরলের ভিপি সানু। তাঁরা এ বার ছাত্র সংগঠন থেকে সরে এলেন, বদলে নতুন দায়িত্ব পেলেন সৃজন এবং সাজি।
শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫
সিবিআইয়ে আপত্তি; রাজ্য পুলিশেই ভরসা অগ্নিমিত্রার
কসবাকাণ্ড ঘিরে শুরু হওয়া রাজনৈতিক টানাপড়েনের আবহে তৃণমূলের ‘হাতিয়ার’ হল বিজেপি নেত্রীর মন্তব্য। আরজি কর-কাণ্ডের তদন্তে সিবিআই ‘সফল নয়’ বলে মন্তব্য করলেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদিকা তথা বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। সেই অনাস্থার কারণে কসবার ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশি তদন্তই চাইলেন তিনি। রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে বসে অগ্নিমিত্রা এমন মন্তব্য করেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর বক্তব্যের ওই অংশ তুলে ধরে সমাজমাধ্যমে বিজেপিকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে তৃণমূল। সাধারণ সম্পাদিকার বক্তব্যের সঙ্গে অবশ্য দূরত্ব তৈরি করেছেন রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, ওই মন্তব্য অগ্নিমিত্রার ব্যক্তিগত, দলের নয়। মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্রকে সঙ্গে নিয়ে অগ্নিমিত্রা যে শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করবেন, সে কথা শুক্রবার রাতেই বিজেপির তরফ থেকে জানানো হয়েছিল। কসবাকাণ্ড নিয়ে সুর চড়াতেই সম্ভবত দুই মহিলা মুখকে সামনে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু সাংবাদিক বৈঠকে আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক যে মন্তব্য করেছেন, তাতে তৃণমূল পাল্টা সুর চড়ানোর সুযোগ করে দিলেন। কসবাকাণ্ডের তদন্ত কোন সংস্থার হাতে থাকা উচিত, এ বিষয়ে অগ্নিমিত্রা বলেন, ‘"আরজি কর মামলায় সিবিআই সফল নয়, এটা আমি আপনার সঙ্গে সহমত। " অগ্নিমিত্রার এই মন্তব্যকেই শনিবার তৃণমূল হাতিয়ার করেছে। তৃণমূলের এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) বিজেপি নেত্রীর বক্তব্যের ওই অংশ তুলে ধরা হয়েছে।