ওয়াকফ সংশোধনী আইন সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়ে যাওয়ার পরে গত শুক্রবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত পার্ক সার্কাস সাতমাথার দখল নিয়ে প্রতিবাদ করেছিল বেশকিছু মুসলিম সংগঠন। এর উত্তেজন ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্যের অন্যান্য সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাতেও। সেই পরিস্থিতিতেই বুধবার নেতাজি ইন্ডোরের একটি সভা থেকে ওয়াকফ নিয়ে বাংলার সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দিলেন, 'দিদি' হিসাবে তিনি মুসলিমদেরও পাশে থাকবেন এবং তাঁদের সম্পত্তি রক্ষা করবেন। বৃহস্পতিবার মহাবীরজয়ন্তী। সেই উপলক্ষে জৈন সম্প্রদায়ের উদ্যোগে বুধবার উদ্যাপিত হচ্ছে 'নবকার মহামন্ত্র দিবস'। তারই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই বলেন, "আমি জানি ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে সংখ্যালঘুদের মনে একটা দুঃখ আছে। আপানারা ভরসা রাখুন, বাংলায় এমন কিছু হবে না যাতে বিভাজন হয়। সবাইকে একসঙ্গে থেকে বাঁচতে হবে। জিও, জিনে দো (বাঁচুন, বাঁচতে দিন)।"
বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
গেট ভেঙে ডিআই অফিসের ভিতরে চাকরিহারা; লাঠিচার্জ পুলিশের
চাকরিহারা স্কুল শিক্ষকদের বিক্ষোভে কসবার ডিআই অফিসে তুমুল উত্তেজনা। পুলিশের সমস্ত বাধা উপেক্ষা করে প্রথমে গেট টপকে এবং তার পর গেটের তালা ভেঙে ডিআই অফিসের ভিতরে ঢুকে পড়লেন বিক্ষোভকারীরা। ডিআই অফিসের ভিতরেই অবস্থান বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। বিক্ষোভাকীরদের দাবি, যোগ্য এবং অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে এসএসসি-কে। ভিড় এবং ধাক্কাধাক্কির মধ্যে এক স্কুল শিক্ষক অসুস্থও হয়ে পড়েন। পরে পুলিশ বিক্ষোভকারী শিক্ষকদের উপরে লাঠিচার্জ করে বলেও অভিযোগ। পুলিশের কড়া পদক্ষেপের পরই ডিআই অফিস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হন বিক্ষোভকারী চাকরিহারা শিক্ষকরা।
গত সোমবারই নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সভা করে চাকরিহারা শিক্ষকদের আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের পরেও নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না চাকরিহারারা।
স্যালাইন এমপি-কে মানছি না';শতাব্দীর বিরুদ্ধে স্লোগান তুলল তৃণমূলই
ওয়াকফ (সংশোধিত) আইনের বিরোধিতায় তৃণমূলের মিছিল থেকেই উঠল দলের সাংসদ শতাব্দী রায়ের বিরুদ্ধে স্লোগান। বুধবার সকাল থেকে এ নিয়ে শোরগোল অনুব্রত মণ্ডলের জেলা বীরভূমে। যদিও বীরভূমের চার বারের সাংসদ শতাব্দীর দাবি, যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন, তাঁরা দলের কেউ বলে তিনি বিশ্বাস করেন না।
ওয়াকফ (সংশোধিত) আইনের বিরোধিতায় সরব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। আগামী ১৬ এপ্রিল ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন, ২০২৫-এর বিরুদ্ধে মামলার শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে। তার আগে রাজ্যজুড়ে জায়গায় জায়গায় চলছে বিরোধীদের বিক্ষোভ। তেমনই একটি প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন হয়েছিল বীরভূমের মুরারইয়ে। তৃণমূলের মিছিলে অংশ নেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। সেখান থেকেই বীরভূমের সাংসদ শতাব্দীর বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে। বলা হয়, "স্যালাইন এমপি-কে মানছি না, মানব না।" প্রসঙ্গত, গত দুই লোকসভা নির্বাচনে মুরারই এলাকা থেকেই সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন চার বারের সাংসদ শতাব্দী। সংসদে যে দিন ওয়াকফ বিল পাশ হয়, সে দিন তিনি উপস্থিত ছিলেন না। পরে নিজের অনুপস্থিতির কারণ হিসাবে তৃণমূল সাংসদ জানান, তিনি অসুস্থ ছিলে। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। স্যালাইন নিতে হয়েছে। এই জন্য সংসদে যেতে পারেননি। যদিও সাংসদের এই ব্যাখ্যায় তাঁর দলেরই একাংশ যে খুশি নন, সেটাই দেখা গেল মুরারইয়ে। যে মিছিলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুশপুতুলও দাহ করা হয়, সেখানে তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে।
নববর্ষে বাড়ি বদলাচ্ছে সিবিআই!
এবার বাড়ি বদলাচ্ছে সিবিআই। আর নয় নিজাম প্যালেস বা সিজিও কমপ্লেক্স। এবার থেকে ঠিকানা বদলাচ্ছে সিবিআই। নতুন ঠিকানা নিউটাউন। নিউটাউনে এনবিসিসি স্কোয়ার নামের ঝাঁ চকচকে বহুতল সিবিআই কলকাতা শাখার নতুন ঠিকানা হতে চলেছে। শোনা যাচ্ছে সব ঠিক থাকলে নতুন অফিসে বসে তদন্ত শুরু বাংলা নববর্ষ থেকেই। ১৪ তলা ওই বহুতলের ৪টি তলেই হচ্ছে নতুন সিবিআই অফিস। নতুন অফিসে সিবিআই অফিস সরায় এতদিন পর এবার এক ছাতার নিচে আসতে চলেছে কলকাতা ব্রাঞ্চের সব শাখা। অ্যান্টি করাপশন ব্রাঞ্চ (ACB), স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ (SCB), ইকোনমিক অফেন্স ব্রাঞ্চ (EOB), ব্যাঙ্ক সিকিউরিটিস এন্ড ফ্রড ব্রাঞ্চ (BSFB ), ইকনোমিক অফেন্স ব্রাঞ্চ (EOB) এবার থেকে এক অফিস থেকেই কাজ করবে। গত কয়েকদিন ধরেই নিজাম প্যালেস থেকে গুরুত্বপূর্ণ মামলার নথি থেকে শুরু করে যাবতীয় জিনিসপত্র সরানো হচ্ছে নতুন অফিসে। সিবিআই অফিসার থেকে সব স্তরের কর্মীরা ব্যস্ত নতুন অফিস গোছাতে। সব জিনিসপত্র যাতে নতুন অফিসে যায় তা নিশ্চিত করার কাজ চলছে।
মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫
"করোনা কালে বেতন ফেরত দেননি কেন?" বিস্ফোরক কুণাল
যেতে পারি, কিন্তু কেন যাব! সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে স্কুলে গেলে পুলিশ যদি গ্রেফতার করে, তাহলে তার দায় কে নেবেন? প্রশ্ন তুলছেন চাকরিহারাদের অনেকেই। এদিনই এই প্রশ্ন তুলে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডিআই অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন চাকরিহারারা। একদিন আগেই নেতাজি ইন্ডোরে চাকরিহারাদের বড় অংশের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশে থাকার বার্তাও দেন। কুণালের দাবি, তাতে কিছুটা চিঁড়ে ভিজেছে। কুণাল বলছেন, "'মুখ্যমন্ত্রী নিজে সবিস্তার ব্যখ্যা দিয়েছেন। তাতে আশ্বাস্ত হয়ে বহু শিক্ষক শিক্ষিকা আজ স্কুলে গিয়েছেন। কাজ করেছেন। যদি কারও কোনও দ্বিধা থাকে আমার ধারণা সেগুলি কেটে যাবে।" তবে কুণালের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর বলা 'ভলান্টিয়ারি সার্ভিসের' ভুল ব্যখ্যা করা হচ্ছে। তুলোধনা করেন বিরোধীদের। মনে করার করোনাকালের কথা। এরপরই করোনাকালের কথা মনে করিয়ে তিনি বলেন, "আমি বাম-রাম শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করছি যখন করোনার সময় দিনের পর দিন স্কুল, বন্ধ ছিল, ক্লাস নিতে হয়নি, অনেক রাজ্যে বেতন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নির্দিষ্ট তারিখে পুরো বেতন দিয়েছে। তখন স্কুল যেতে হয়নি, ক্লাস নিতে হয়নি!" কুণালের প্রশ্ন, "তখন মনে হয়নি স্কুল যাচ্ছি না বেতন নেব কেন? তখন বেতন নিলেন কেন, ফেরত দিলেন না কেন?"
অগ্নিগর্ভ মুর্শিদাবাদ; রাজ্যের মন্ত্রী বললেন, "বাম জামানায় পুলিশ লাঠিপেটা করেনি"
নয়া ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদ। অশান্তি রুখতে গিয়ে আক্রান্ত বেশ কয়েকজন পুলিশ। ভাঙচুর পুলিশের গাড়ি। এবার এ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। তাঁর প্রশ্ন, "কী এমন হয়ে গেল যে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হল?" তাঁর এও বক্তব্য, হিংসাত্মক পথ ধরলে আন্দোলন শেষ হয়ে যাবে। এক সাক্ষাৎকারে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেন, "আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি যে কলকাতায় প্রায় ৪৫ বছর আমরা ওঠাবসা করছি। নন্দীগ্রাম তো সেদিন….। সিপিএম-এর পুলিশ কিন্তু আমাদের উপর লাঠিচার্জ করেনি। এটা সত্যি কথা। আমরা সেই সুযোগই দিইনি। বহু সভা করেছি।" জানা গিয়েছে, ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ চলছিল সেই সময় পুলিশ ব্যারিকেড করে তা আটকানোর চেষ্টা করে। এর পরে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় বিক্ষোভকারীদের। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে লাঠিপেটার। পাল্টা বিক্ষোভকারীরা পুলিশের গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বলতে গিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী বলেন, "হিংসাত্মক আলোচনায় আন্দোলন করতে গেলে ফেল হয়ে যাবে। আমরা হিংসা চাই না। হিংসা হলে আটকে যাব। আন্দোলন মাঝ-পথে থেমে যাবে। আর যদি হিংসা না হয়, তাহলে আন্দোলন বিভিন্ন রূপরেখা নেবে।"
অভিষেকের কেন্দ্রের ভোটের ফলকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে মামলা!
ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা কলকাতা হাই কোর্টে। মামলাকারী ওই কেন্দ্রেরই বিজেপি প্রার্থী। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি ছিল। এদিন বড় নির্দেশ দিল আদালত। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচন প্রক্রিয়া ও ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ দাস (ববি)। তাঁর আইনজীবী বিল্লাদল ভট্টাচার্য বলেছেন, "ওই নির্বাচনী এলাকায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে এবং আমি আশা করি আদালতের এই আদেশ তা প্রকাশ্যে আনবে।" দীর্ঘ ৭ মাস পর মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে মঙ্গলবার। এদিন বিচারপতি সুগত ভট্টাচার্য নির্দেশ দেন, ওই কেন্দ্রের সমস্ত নির্বাচনী তথ্য, সিসিটিভি ফুটেজ, ডিজিটাল নথি সংরক্ষণ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন ও ওই কেন্দ্রের জেলা নির্বাচনী আধিকারিককে এই সমস্ত ফুটেজ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। পরবর্তী শুনানি ৫ মে।