যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে তিন জন যাদবপুরের বর্তমান পড়ুয়া এবং তিনজন প্রাক্তনী। এর আগে এই ঘটনায় সর্বপ্রথম গ্রেফতার করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্ক বিভাগের প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীকে। তারপর একে একে গ্রেফতার হয় মনোতোষ ঘোষ এবং দীপশেখর দত্ত নামের দ্বিতীয় বর্ষের আরও দুই পড়ুয়া।
সূত্রের খবর, গত কয়েকদিন ধরেই লাগাতার যাদবপুর মেন হস্টেলের একাধিক ছাত্রকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছিল পুলিশ। ঘটনার দিন ঠিক কী হয়েছিল, কী ভাবে ঘটনাটি ঘটল, কারা কারা সেই সময়ে সেখানে উপস্থিত ছিল, এই সব নিয়েই পড়ুয়াদের কাছে জানতে চাইছিলেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, তার মধ্যে চার জনের বয়ানে কিছু অসঙ্গতি আসে।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম মহম্মদ আসিফ অফজল আনসারি, বয়স ২২। আসিফ পশ্চিম বর্ধমানের উত্তর আসানসোলের বাসিন্দা। যাদবপুরের ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। মেন হস্টেলের A2 ব্লকের ৮৪ নম্বর ঘরের আবাসিক। দ্বিতীয় জনের নাম মহম্মদ আরিফ, বয়স ১৮, বাড়ি জম্মুতে। যাদবপুরের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া। হস্টেলের A2 ব্লকের ৯৬ নম্বর রুমে থাকত।
তৃতীয় জন হলেন, অঙ্কন সরকার, বয়স ২০। বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার নারায়ণপুরে। ইনিও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র৷ থাকত A2 ব্লকের ৭৬ নম্বর রুমে। বুধবার যাদবপুরের এক প্রাক্তনীকেও আটক করা হয়েছে। অসিত সর্দার এবছরই সংস্কৃত বিভাগ থেকে স্নাতক হয়েছেন। অসিতের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে।
ইতিমধ্যেই যাঁদের গ্রেফতার করা তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই এই ৬ জনের কথা জানতে পারেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন নবাগত ছাত্রটিকে চা খাইয়ে সিনিয়রদের ঘরে নিয়ে যান ধৃত সৌরভ চৌধুরী। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন এই ধৃত মহম্মদ আরিফ-সহ বাকিরা। অভিযোগ, ওই ঘরেই প্রায় ৩ ঘণ্টা ছিলেন প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়া।
তদন্তকারীরা মনে করছেন, ওই তিন ঘণ্টায় ছাত্রটির উপরে এমন কিছু মানসিক নির্যাতন চালানো হয়, বা অত্যাচার করা হয়, যার জেরে সে সেই ঘর থেকে পড়িমড়ি করে বেরিয়ে যায় এবং কোনও ভাবে পড়ে যায়। তবে গোটা বিষয়টিই এখনও তদন্ত সাপেক্ষ৷ সবকটি বিষয়ই পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন