পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি। জেলে ঢুকেই হতাশা প্রকাশ করেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জেল সূত্রে খবর, কেন বেসরকারি সংস্থায় উঁচু পদের চাকরি ছাড়লেন? কেন-ই বা রাজনীতিতে এলেন? তা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। জেল কর্মীদের কাছে তাঁকে এই মন্তব্য করতেও শোনা যায় যে, রাজনীতিতে না এলে এদিন দেখতে হত না তাঁকে। শুক্রবার আদালত জামিনের আবেদন নাকচ করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। তারপরই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রেসিডেন্সি জেলে। বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেলের ১ নম্বর ব্লকের একটি সেলে আছেন পার্থ।
বেসরকারি সংস্থায় উচ্চপদে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন বিতর্কিত এই প্রাক্তন মন্ত্রী। তারপর সময় যত কেটেছে তত-ই রাজনীতির আঙিনায় নিজের জায়গা-জমি বেশ পোক্ত করেছেন। রাজ্যে পালাবদলের পর তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মমতার মন্ত্রিসভায় তিনি ছিলেন অন্যতম সদস্য। শিক্ষা থেকে শিল্প, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্বে তাঁকে এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি তাঁর জন্যই তৃণমূলে তৈরি হয়েছিল মহাসচিব পদটি। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার কারণে ইডি তাঁকে গ্রেফতার করার পরই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পাশপাশি, তাঁকে দল তৃণমূল কংগ্রেস থেকেও বরখাস্ত করা হয়। একসময়ের দাপুটে নেতা-মন্ত্রী এখন জেলে! আর সেখানেই হতাশা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গলায়।
শুক্রবার পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের আইনজীবী আদালতে তাঁর জামিনের আবেদন করলেও তা গ্রাহ্য হয়নি। তাঁর আইনজীবী দাবি করেন, 'পার্থ এখন ভিক্টিম। তিনি যে অর্পিতার সঙ্গে বিভিন্ন কোম্পানির অংশীদার বলে দাবি করা হচ্ছে, সেইসব নথি জাল।' এর পাশাপাশি, তিনি এও বলেন, তাঁর মক্কেল বিধায়ক পদও ছাড়তে চান। কারণ প্রভাবশালী তকমা মুছে ফেলতে চান। কারণ, ইডি তরফে পাল্টা সওয়াল করা হয় যে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। অ্যারেস্ট মেমোতে পার্থ জানিয়েছেন যে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া যাবে না। ১৪ দিনের জেল হেফাজতের আবেদন জানায় ইডি।
ইডি-র সেই আবেদন মঞ্জুর করে আদালত। ১৮ অগস্ট পর্যন্ত ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয় পার্থ ও অর্পিতার। তারপর সন্ধ্যাতেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে। ওদিকে পার্থর জেল হেফাজত হতেই বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া দেন তৃণমূলের দলীয় মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, 'তাঁর জন্য কারা কতৃপক্ষের তরফে যেন বিশেষ ব্যবস্থা না করা হয়। সাধারণ সেলেই তাঁকে যেন রাখা হয়। সাধারণ বন্দির মতই তাঁকে রাখা হোক। পার্থ চ্যাটার্জি দেখুন, কেমন লাগে।'
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন