অবশেষে গরুপাচার মামলায় আটক বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রতর মণ্ডল। এদিন সকালেই বোলপুরের নীচুপট্টিতে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে এদিন হানা দেয় সিবিআই গোয়েন্দারা। ১০-১২টি গাড়ির কনভয় নিয়ে পৌঁছন সিবিআই অফিসাররা। মুহূর্তে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বাড়ি ঘিরে ফেলা হয় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে। শুধু মেইন গেট নয়, দুদিক দিয়ে বাড়িতে ঢোকেন সিবিআই আধিকারিকরা। অনুব্রতর বাড়িতে ঢুকেই দরজায় তালা লাগিয়ে দেন সিবিআই অফিসাররা। এরপর বেশ কিছুক্ষণ অনুব্রতর বাড়িতে ছিল সিবিআই আধিকারিকরা। এরপর অনুব্রতকে নিয়ে গাড়িতে তোলা হয়। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সিবিআই সূত্রে খবর, আজই গ্রেফতার করা হতে পারে তৃণমূল নেতাকে। যদিও একটি সূত্রের খবর, 41 A তে নোটিশ দিয়ে দুর্গাপুর ক্যাম্প অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাচ্ছে সিবিআই। বাড়িতে রাজি নন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্তকারীরা।
তৃণমূলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। আর এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে তৃণমূল। এবার কী করবে দল? পাশে থাকবে নাকি দূরত্ব তৈরি করবে দল? স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
অন্যদিকে, অনুব্রতর আটক নিয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী ও সিপিএম নেতা বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, 'অনুব্রত একা শুধু নন, তার পেছনে একটি বড় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও রাজনৈতিক চক্রান্ত রয়েছে। এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের যিনি মাথা তাঁর দিকে হাত বাড়াতে হবে। কেলেঙ্কারির মক্ষীরানী হলেন মুখ্যমন্ত্রী। তদন্ত যদি ঠিক পথে যায় তাহলে মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করতে হবে। এটা সিবিআইয়ের অনেক আগেই করা উচিত ছিল। অনেক দেরি করে ফেলেছে। এই তদন্তকারী সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। তাদের সেই বিশ্বাসযোগ্যতা ফেরানোর জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু তা যেন লোক দেখানো না হয়ে যায়। সঠিক তদন্ত করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে যেন পৌঁছনো যায়। অনের দূর সিবিআইকে যেতে হবে। আইনের দিকে থেকে গ্রেফতার করা ছাড়া উপায় ছিল না।'
অনব্রতর আটকের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবৃতি দাবি করেন সুজন চক্রবর্তী। সিপিএম নেতা বলেন, 'বাড়ি থেকে কার্যত ঘাড় ধরে দোর্দণ্ডপ্রতাপ মাফিয়া অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। কেন ওই অবস্থা তৈরি হল? দশবার বারোবার সিবিআই ডাকছে আর উনি এড়িয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে ডাক্তারকে দিয়ে ভুল লেখালেন। তাতেও ধরা পড়ে গেলেন। লাজ লজ্জা নেই কিছু! উনি যখন চড়াম চড়াম ঢাক বাজাবার কথা বলেছেন তখন মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্রয় দিয়েছেন। উনি যখন পুলিসকে বোমা মারার কথা বলেছেন তখন মুখ্যমন্ত্রী কার্যত সার্টিফিকেট দিয়েছেন। বহু জেলার জেলা সভাপতি বদল হয়েছে। উনি বদল হননি। ম্যাড়া লড়ে খুঁটির জোরে। অনুব্রত মণ্ডল মার্কা ম্যাড়া খুঁটির জোরে লড়ছে। খুঁটি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি কোথায়? তিনি কী বলবেন? অবিলম্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবৃতি দেওয়া উচিত।'
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন