এবার পড়াশোনার পাশাপাশি রোজগারও করা যাবে। এমনটাই পরিকল্পনা রাজ্য সরকারের । জানা গিয়েছে যে সম্প্রতি মন্ত্রিসভায় দুঃস্থ স্নাতক পড়ুয়াদের রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে ইন্টার্নশিপের সুযোগ দেওয়া হবে। এই পরিষেবার বিনিময়ে তাঁদের অর্থ দেওয়া হবে। তবে এই মর্মে এখনও কোনও নোটিফিকেশন জারি করেনি রাজ্য সরকার।
রাজ্য সরকারের এই পরিকল্পনার কথা সামনে আসার পর বিষয়টি নিয়ে একটি মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেল। কারণ, অনেকেই মনে করছেন এই ধরনের ইন্টার্নশিপ থেকে যদি আগামিদিনে চাকরির সুযোগ করে দেওয়া যায়, সেটাই কাজের কাজ হবে।
প্রসঙ্গত, আর্নিং উইথ লার্নিং।
রাজ্যের ব্লক ও পঞ্চায়েত-স্তরে কাজ করার উদ্দেশ্যেই মূলত তৈরি হচ্ছে ইন্টার্ন পদ। ভাতা দেওয়া হতে পারে পাঁচ হাজার টাকা। ইন্টার্ন করার পরে মিলবে শংসাপত্র। তা দেখিয়ে পরে ওই কাজে স্থায়ীকরনের কথা ভাববে সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, কাজের উৎকর্ষ খতিয়ে দেখে ইন্টার্নশিপের মেয়াদও বাড়তে পারে। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, প্রতি বছর ইন্টার্ন হিসাবে নিয়োগ হবে ৬ হাজার পড়ুয়া। নিয়োগ প্রক্রিয়ার দেখভাল করবে উচ্চশিক্ষা দফতর।
এর মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে জানবে পড়ুয়ারা। কোথায় কীভাবে এই সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়, তা তাঁরা শিখবেন হাতেকলমে। কোর্স শেষে মিলবে সার্টিফিকেট। পরে তাঁরা সেই সার্টিফিকেট কাজে লাগাতে পারবেন। উচ্চশিক্ষা এবং পরবর্তী চাকরি জীবনেও কাজে লাগবে এই সার্টিফিকেট। উন্নততর মানুষ গড়ার লক্ষ্যেই নতুন এই প্রকল্প চালু করছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, স্নাতকস্তরে ইন্টার্ন হতে হলে নূনতম ৬০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। জানা গিয়েছে, উচ্চশিক্ষা দফতর দ্রুত এ বিষয়ে নির্দেশিকা প্রকাশ করবে।
এই বিষয়ে টিএমসিপি ছাত্র নেতা রাজু মেহেদী বলেন, "ছাত্র দরদী মুখ্যমন্ত্রী সবসময় ছাত্রছাত্রীদের পাশে থাকেন। কিছুদিন আগেই স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পের মধ্য দিয়ে অনেক দুঃস্থ ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষায় সুবিধা লাভ করেছে। উচ্চশিক্ষায় নতুন যে ইন্টার্নশিপ বাংলার ছাত্রছাত্রীদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে আসার কথা ভাবছেন, তাকে সাধুবাদ জানাই। একদিকে দেশের প্রধানমন্ত্রী যেখানে ভাঁওতাবাজি দিয়ে নিজেদের আত্মনির্ভর হতে বলে হতাশার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন, বিপরীতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পড়ুয়াদের ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করে দিয়ে তাদের স্বনির্ভর করে তোলার চেষ্টা করছেন। তাতে ছেলেমেয়েরা উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি অনেক কিছু জানতে পারবে এবং নিজেদের কেরিয়ার গড়তে সক্ষম হবেন।"
এসএফআই-এর কলকাতা জেলা সভাপতি দেবাঞ্জন দে বলেন, "এই ধরনের কথা মুখ্যমন্ত্রী এর আগেও বলেছেন। কিন্তু একটিও ফলপ্রসূ হয়নি। এই ইন্টার্নশিপের একটা মেয়াদ রয়েছে। তবে কি এবার স্থায়ী চাকরির সম্ভাবনা একেবারে মুছে গেল ? ৫০০০ টাকার বিনিময় রাজ্যের মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের রাজ্য সরকার পরিচালিত বিভিন্ন ক্যাম্পে বসিয়ে রাখা হবে। এভাবে সরকার এদের ভবিষ্যতে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার দিক থেকে দায়মুক্ত হতে চাইছে। এই ইন্টার্নশিপ করে যে তাঁরা কোথাও চাকরি পাবেন, তেমনটাও তো নয়। কারণ, রাজ্যে শিল্প, সার্ভিস ইউনিট এবং ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট বন্ধ। পাশাপাশি সরকারি চাকরির যে কী অবস্থা তা কলকাতা হাইকোর্টের একের পর এক রায়দানে আমরা দেখতে পাচ্ছি।"
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন