চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের মামলায় আদালতের প্রশ্নের মুখে স্কুল সার্ভিস কমিশন। এখনও অবধি স্কুল সার্ভিস কমিশনের কর্তারা যে সকল বক্তব্য পেশ করেছেন আদালতে, তাহা রীতিমতো বেআব্রু। যথা, যাঁহারা গত এক বৎসর সরকারি কর্মচারী হিসাবে সরকারি স্কুলগুলিতে কাজ করা এবং বেতনপ্রাপ্ত পঁচিশ জন কর্মীকে কমিশন নিয়োগ করে নি, নিয়োগের কোনও তথ্যও নাই। কমিশনের তরফে জানান হয়েছে, কমিশন ওই ২৫ জনের সুপারিশ দেয় নি।
চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর নিয়োগ নিয়ে মামলা চলছে আদালতে। কিন্তু নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ এর আগে বহু বার উঠেছে। উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও প্রায় একই চিত্র দেখা গিয়েছে। নিয়োগের পরীক্ষার ফল এবং অন্যান্য যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রস্তুত তালিকায় প্রার্থীদের অবস্থান, পরের প্রার্থী আগে সুযোগ পাওয়ার অভিযোগ, অথবা তালিকা-বহির্ভূত প্রার্থী নিযুক্ত হইবার অভিযোগ বার বার সামনে এসেছে। আদালতে মামলা চলেছে, প্রার্থীরা নিয়োগের দাবিতে নানা আন্দোলন করেছে।
উল্লেখ্য, স্কুলে চতুর্থ শ্রেণি বা গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগ মামলায় নতুন মোড়। এর আগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল, স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে। এ বার আঙুল উঠল মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দিকেও। দুর্নীতি করে ২৫ নয় প্রায় ৫০০ জনের বেশি নিয়োগ করা হয়েছে আদালতে দাবি করলেন মামলাকারীরা। বৃহস্পতিবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, প্রত্যেকের নাম, ঠিকানা-সহ তালিকা আদালতে জমা দিতে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে গ্রুপ ডি কর্মী হিসাবে প্রায় ১৩ হাজার নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে রাজ্য। সেই মতো পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা ও ইন্টারভিউ নেয় সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশন। তারপর প্যানেল তৈরি করে।
২০১৯ সালে ওই প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়। অভিযোগ, প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রচুর নিয়োগ করেছে কমিশন। ২৫ জনের নিয়োগের সুপারিশ সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরে দায়ের হয় মামলা। এরপরই ওই ২৫ জনের নিয়োগের সুপারিশের নথি-সহ কমিশনের সচিবকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে প্রয়োজনে সিবিআইকে দিয়ে এই তদন্ত করানো হবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
বুধবার এসএসসি সচিব হাই কোর্টে উপস্থিত হন। এসএসসির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, নিয়োগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে ওই ২৫ জন চাকরি পান। কীভাবে চাকরি পেলেন তাঁরা, সে সংক্রান্ত প্রশ্ন করে হাই কোর্ট। নিয়োগ সংক্রান্ত নথিপত্র চাওয়া হয়। তবে উপযুক্ত নথিপত্র পেশ করা সম্ভব হয়নি। সে কারণে এসএসসি সচিবকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন