করোনা আবহে রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন দফতরের তরফে রাজ্যের সব ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটগুলির (ITI) প্রধানদের নির্দেশিকা পাঠিয়ে জানান হয়েছিল, আগামী ২৩ নভেম্বর থেকে করোনা প্রতিরোধে যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা হবে প্রতিষ্ঠানগুলি। কিন্তু, তারপরেই গত রবিবার সেই সিদ্ধান্ত বদল করে রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন দফতর। রাজ্যজুড়ে থাকা ITI-গুলি সোমবার থেকে পড়ুয়াদের খোলা হবে না বলেই জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসকে এখনও বাগে আনতে পারেনি গোটা দেশ।
কিছু দিন আগে রাজ্যের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং বা ITI-এর অধিকর্তা সৌমেন বসু নির্দেশ দিয়েছেন ২৩ নভেম্বর থেকে রাজ্যের আইটিআইগুলি খুলে দিতে হবে। শিক্ষক ও অভিভাবকরা কারিগরি শিক্ষা দফতরের এমন নির্দেশিকায় হতভম্ব হয়ে গিয়েছেন। অনেকে মনে করছেন, কারিগরি শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকা নবান্নের আদেশ মেনে হয়নি।
কারণ, চলতি মাসের শুরুতে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাক্ষর করা নির্দেশিকা বলছে ৩০ নভেম্বরের আগে কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা চলবে না।
সৌমেনবাবুর দাবি, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আইটিআইকে এক চোখে দেখলে হবে না। আইটিআইগুলিতে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আর যেহেতু কারখানা খুলে গিয়েছে তাই শিল্পের প্রশিক্ষণকেন্দ্র খোলায় অসুবিধে নেই। ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং-এর অধিকর্তা এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, "কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশিত কোভিড বিধি মেনেই রাজ্যের আইটিআইগুলি চলবে। মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনা করে নয়া এই নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে।"
জানা গিয়েছে, এই তাড়াহুড়ো আসলে কিছুটা কেন্দ্রের চাপে পড়েই। ডিরেক্টরেটের এক কর্তা বলেন, আমাদের দফতরের সঙ্গে শিক্ষাদফতরের ফারাক রয়েছে। এখানে পড়াশোনা মূলত প্রশিক্ষণ নির্ভর। দীর্ঘদিন ধরে তা বন্ধ। অবশ্য অনলাইনে ক্লাস চলছিল।
রাজ্যজুড়ে মোট প্রায় ৩৭০টি (দুটি আপাতত বন্ধ) আইটিআই রয়েছে। তারমধ্যে ১৩০টি প্রত্যক্ষ সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে (পিপিপি মডেলে) পরিচালিত। বাকিগুলি পুরোপুরি বেসরকারি। ওই কর্তা জানান, প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়ারা আসবেন। তবে যাঁরা দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দেবেন, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। শুধু এই বর্ষের পরীক্ষার্থীর সংখ্যাই প্রায় ৪৩ হাজার। নিয়ম মেনে এত পড়ুয়াকে এক জায়গায় আনা কীভাবে সম্ভব? ওই কর্তার দাবি, আইটিআইগুলিতে প্রচুর জায়গা রয়েছে। ক্যাম্পাস বড়। তাই গাদাগাদি হওয়ার প্রশ্ন নেই। সেপ্টেম্বরে মন্ত্রকের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। সতর্কতা হিসেবে সেগুলি মেনে চলা হবে। পড়ুয়া, শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত জল, সাবান ও স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা থাকবে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন