খুনিদের বিচার চাইতে ব্রিগেডে আসবেন ছিতামনি সরেন!

কলকাতা নিউজ ব্যুরো: বয়সের ভারে ঝুঁকে পড়েছে গোয়া শরীর। এক বাম সমর্থক বললেন,"শরীর ভাল নয় তোমার। অনেকটা রাস্তা জেতে হবে। এবারের মতন বাদ দাও।" মুহূর্তেই ঝাঁঝিয়ে উঠলেন বৃদ্ধা। " কেন রে... বারবার একই কথা বলছিস...আগে বলেছি তো মরতে হলে ব্রিগেডেই মরবো। তবু এবারের ব্রিগেডে যাব আমি।"
এই বৃদ্ধা আর কেউ নন, তিনি হলেন ছিতামনি সরেন। নিহত শালকু সরেনের মা।

সালটা সম্ভবত ২০০৮/২০০৯ হবে। রাজ্য তখন উত্তপ্ত।

পরিবর্তনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে গোটা রাজ্যে। উত্তপ্ত জঙ্গল-মহল। একদিকে জনসাধারণের কমিটি। অন্যদিকে রাজ্যের তখনকার ক্ষমতায় থাকা বামপন্থীরা। বাম সমর্থকদের রক্ত ঝরছে গোটা জঙ্গল-মহল জুড়ে। একের পর এক এলাকা দখল নিচ্ছে জনসাধারণের কমিটি ও  মাও নেতা কিষানজী, আকাশ ও বিকাশরা। শুধু পারছিলনা ধরমপুর দখল নিতে। রাজ্য প্রশাসন তখন ব্যর্থ। নিজেদের জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তোলে শালকু সরেন। টানা ৩৬ ঘণ্টা মাওবাদীদের সঙ্গে বীরত্বের সাথে লড়াই করে প্রাণ দিলেন শালকু ও তাঁর আরও কিছু সহযোদ্ধা।
ধরমপুরের সিপিআই(এম)এর দলীয় দফতরের সামনে শালকুর মৃতদেহ ঘিরে রাখল কিষানজীরা।

পচাগলা দেহ ৫ দিন পরে উদ্ধার করে পুলিশ। শালকুর দেহের সামনে সেদিন দাঁড়িয়ে এক মহিলা বলেছিলেন আর কত ছেলেকে মারবে ওরা? ওই মহিলা আর কেউ নয় শালকু সরেনের মা ছিতামনি সরেন।
যদিও কলকাতার বুদ্ধিজীবীরা বলেছিলেন , " মেরেছে বেশ করেছে।"
শালকু মারা যাবার পরে ছিতামনি বলেছিলেন, শালকু একা নয়, জঙ্গল-মহলে মাওবাদী আর তৃণমূলের লোকেরা মিলে যাদেরকে মেরেছে তারা সবাই আমার ছেলে। আমি ওদের সবার মা। আর এই সবার হয়ে আগামী ৩ রা ফেব্রুয়ারি ব্রিগেডে আসবেন ছিতামনি সরেন।